Here are pictures and details of the fascinating places of the world.

Full width home advertisement

Post Page Advertisement [Top]

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সুস্বাদু মণ্ডা।

য়মনসিংহের মুক্তাগাছার নাম নিলেই চলে আসে মণ্ডার নাম। এখানকার মণ্ডার সুখ্যাতি শোনেননি, এমন মানুষ বোধ হয় কম পাওয়া যাবে। ময়মনসিংহ সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমের মুক্তাগাছা। মণ্ডার জন্য এখানে একটা দোকানের কথাই সবাই বলেন। সেটা হলোগোপাল পালের প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকান


মণ্ডার বিবরণ

একসময় কলাপাতা, পদ্মপাতায় এখন পাতলা কাগজে মুড়িয়ে বিক্রি  
হয়।
মণ্ডা বাংলাদেশের একটি গোল চ্যাপ্টা আকৃতির বাঙালি মিষ্টান্ন দেখতে অনেকটা পেঁড়ার মত। "‍মিঠাই-মণ্ডা" একটি বহুল প্রচলিত শব্দবন্ধ। কড়া পাকের সাধারণতঃ চিনি মেশানো ক্ষীরের গরম নরম অবস্থায় গোল তাল পাকানো মণ্ডকে পরিষ্কার শক্ত কোন তলের উপর বিছানো কাপড়ের উপর হাতদিয়ে ছুঁড়ে আছাড় মেরে সাধারণতঃ চ্যাপ্টা করার কাজটি করা হয়। পরে ঠাণ্ডা হলে শক্ত হয়ে যায় তখন কাপড় থেকে খুলে নেওয়া হয়। তাই যেদিকটা নীচে (কাপড়ে লেগে) থাকে সেটা পুরো সমতল হয়, আর অন্য দিকটা একটু উত্তল আর কিনারা একটু ফাটা ফাটা হয়। ক্ষীরের রঙের উপর নির্ভর করে মণ্ডা সাদা বা ঈষৎ হাল্কা খয়েরি রঙের হয়। (সম্ভবত চিনিকে বেশী গরম করলে পুড়ে বা ক্যারামেলাইজ হয়ে খয়েরী রং ধরে) মণ্ডা সাধারণতঃ কাগজে মুড়ে বিক্রি করা হয়।



মণ্ডা তৈরির ওপকরন
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সুস্বাদু মণ্ডা।
ময়মনসিংহ শহরের অদূরবর্তী মুক্তাগাছা নামক স্থানটি সবোর্ত্তম মণ্ডা তৈরির জন্য প্রসিদ্ধ। মুক্তাগাছা তে শীতকালে সাধারণত আরও এক ধরনের মন্ডা পাওয়া যায় যা চিনির পরিবর্তে খেজুরের গুড় দিয়ে। মণ্ডার মূল উপাদান দুধ চিনি বর্তমানে ২০টির এক কেজি মন্ডা ৪৪০ টাকা প্রতি পিস ২২ টাকা দরে বিক্রি হয়  মণ্ডা তৈরির পর ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয় না। স্বাভাবিক তাপমাত্রায় গরমের সময় / দিন শীতকালে ১০/১২ দিন ভালো থাকে



গোপাল পালের প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকান

গোপাল পালের প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকান । ১৮২৪ সালে দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন
দোকানে ঢুকে চোখে পড়বে চেয়ারগুলোএলআকৃতি করে সাজিয়ে রাখা। সামনে ছোট ছোট টেবিল। ক্রেতারা বসে অর্ডার দিলে পরিবেশন করা হয় মণ্ডা। আরেক পাশে কাউন্টার। বিল মেটানোর পাশাপাশি প্রয়োজনমতো মণ্ডা এখান থেকে কিনে নিতে পারেন ক্রেতারা। ওই কাউন্টারে বসেন বয়স্ক এক ভদ্রলোক। তাঁর নাম রবীন্দ্রনাথ পাল। মালিকপক্ষ তিনি। মুক্তাগাছার মণ্ডার আবিষ্কারক রবীন্দ্রনাথ পালের পূর্বপুরুষ গোপাল পাল। তিনি ১৮২৪ সালে দোকানটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর কেটে গেছে প্রায় ২০০ বছর। মণ্ডা তৈরির ব্যবসা চলছে বংশানুক্রমে। এক পুরুষ থেকে আরেক পুরুষে। সে হিসাবে এখন পঞ্চম পুরুষের ব্যবসা চলছে। তারা স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, ‘মণ্ডা তৈরির মূল রেসিপিটা তাদের পারিবারিক। গোপনীয় এই কৌশলটা শুধু তারাই জানে। ফলে মণ্ডার নামে এখানে-সেখানে যা বিক্রি হয়, তা কোনোভাবেই আসল না। ময়মনসিংহ, ঢাকাসহ দেশের কোথাও তাদের কোনো শাখা, এজেন্ট, শোরুম, বিক্রয়কেন্দ্র বা বিক্রয় প্রতিনিধি নেই। আসল মণ্ডার স্বাদ পেতে হলে মুক্তাগাছায়গোপাল পালের প্রসিদ্ধ মণ্ডার দোকানেআসতে হবে । 

মণ্ডা তৈরির ইতিহাস
মণ্ডার সঙ্গে বৃহৎ কোনো গোষ্ঠী নয়, বরং একটি পরিবারের কৃতিত্ব জড়িয়ে রয়েছে ।   মণ্ডা এক প্রকারের সন্দেশ। শুধু ছানা চিনি দিয়ে এটি বানানো হয়। তবে স্বাদের রহস্যটাপাকেরমধ্যে লুকিয়ে আছে, যা বছরের পর বছর ধরে গোপন রেখেছেন গোপাল পালের বংশধরেরা।
মণ্ডা তৈরির পদ্ধতিটি গোপাল পাল স্বপ্নে পেয়েছিলেনএমন একটি দাবি আছে তবে মণ্ডার প্রসারের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন মুক্তাগাছার জমিদারেরা। গোপাল পাল তাঁর উদ্ভাবিত মণ্ডা প্রথমে খাওয়ান মুক্তাগাছার জমিদার সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীকে। এর স্বাদ তাঁকে মুগ্ধ করে। এরপর এটি জমিদারবাড়ির দৈনন্দিন খাবারের তালিকায় জায়গা করে নেয়। শুধু তা- নয়, জমিদারবাড়ির অতিথিদের মণ্ডা দিয়ে আপ্যায়ন করা নিয়মিত ঘটনা ছিল। আবার জমিদারেরা উপহার হিসেবে বিশিষ্টজনদের কাছে মণ্ডা পাঠাতেন। এভাবেই মুক্তাগাছার ছোট্ট গণ্ডি পার হয়ে মণ্ডার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

ইতিহাসটা অনেকটা এমন
ণ্ডা নিয়ে একটি কিংবদন্তি রয়েছে দুই শতাধিক বছর আগে মুক্তাগাছার প্রসিদ্ধ মন্ডার জনক গোপাল পাল এক রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হলেন শিয়রে দাঁড়িয়ে এক ঋষি তাকে আদেশ দিচ্ছেন মন্ডা মিষ্টি তৈরি কর পরদির গোপাল ঋষির আদেশে চুল্লি খনন শুরু করলেন দৈবাৎ উদয় হলেন সাধু তিনি হাত বুলিয়ে দিলেন চুল্লিতে শিখিয়ে দিলেন মণ্ডা তৈরির কলাকৌশল গোপালকে দুধ চিনি দিয়ে তৈরি হলো মন্ডা গোপাল তার নব উদ্ভাবিত মন্ডা পরিবেশন করলেন তৎকালীন মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর রাজদরবারে
মন্ডা খেয়ে মহারাজা পেলেন পরম তৃপ্তি , আর বাহবা দিলেন গোপালকে শুরু হলো মণ্ডার যাত্রা গোপাল সম্বন্ধে জানা যায়, বাংলা ১২০৬ সালে তৎকালীন ভারতবর্ষের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন নবাব সিরাজদৌলার মৃত্যুর পর গোপাল মাতৃভূমি রাজশাহীতে চলে আসেন পরে বাংলা ১২৩০ সালে তিনি মুক্তাগাছায় বসত গড়েন প্রথম মণ্ডা তৈরি হয় বাংলা ১২৩১ সালে

কে কে মন্ডা খেয়েছে
দোকানে বসে মণ্ডা খাওয়ার পাশাপাশি কিনে বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন ক্রেতারা।
পাকিস্তানের ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান, ভারতের পশ্চিম বঙ্গের সাবেক মূখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান কৃষ্ণ রায় , উপমহাদেশের প্রখ্যাত সারোদ বাদক ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ ,রাশিয়ার কমরেড স্ট্যালিন , মন্ডা খেয়ে উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন এছাড়া, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান, সংবিধানপ্রণেতা . কামাল হোসেনের মতো রাজনীতিকদের পাশাপাশি চলচ্চিত্র জগতের রাজ্জাক, আনোয়ার হোসেন, সোহেল রানা, বুলবুল আহমেদ, কবরী, শাবানা, ববিতাসহ আরও অনেকে এই দোকানে বসে মণ্ডা খেয়ে সুনাম করেছেন।
উল্লেখ্য যে, ময়মনসিংহ শহরে মুক্তাগাছার বেশ কিছু দোকানে মণ্ডা বিক্রি হয় যা আসল মন্ডা নয় আসল মন্ডা একমাত্র গোপাল পালের আদি মন্ডা হিসাবে পরিচিত যার কোন শাখা নেই।
সম্পাদনা
মোমের দেয়াল



1 টি মন্তব্য:

Bottom Ad [Post Page]

| Designed by Nur Mohammad